ওয়ার্ল্ড আফেয়ার্স সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংজ্ঞা যা বিসিএস প্রিলি, রিটেন এবং ভাইভা পরীক্ষাতে আসতে পারে।

 


ভূ-রাজনীতি: একটি রাষ্ট্র তার অবস্থানগত কারণে যে রাজনৈতিক সুবিধা ভোগ করে তাকে ভূ-রাজনীতি বলে যেমন বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে হওয়ায় উন্নত দেশ সমূহের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পায় উন্নত দেশ সমূহের এ সাগর ব্যবহারের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে।

 

ভূ-অর্থনীতি: অবস্থানগত কারণে কোনো রাষ্ট্রীয় যে অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করে তাকে ভূ-অর্থনীতি বলে। যেমন বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ অংশে ইউরেনিয়াম রয়েছে যেটি আণবিক অস্ত্রের কাঁচামাল।এই কারণে অন্যান্য দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশে অনেক অর্থনৈতিক সুবিধা পায়।

 

নীল অর্থনীতি: যে কোন দেশের পানি কেন্দ্রিক প্রাকৃতিক সম্পদকে নীল অর্থনীতি বলে। পানির সাথে সম্পর্কিত সকল সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে সে সকল সম্পদকে নীল অর্থনীতি বলে।

 

স্নায়ুযুদ্ধ: যখন দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে যুদ্ধের যাবতীয় প্রস্তুতি বিদ্যমান থাকে যুদ্ধের পরিবেশ ও বিরাজ করে কিন্তু প্রকৃত যুদ্ধ হয় না তাকে স্নায়ুযুদ্ধ দ্য কোল্ড ওয়ার বলে।

 


পুঁজিবাদ: যে অর্থনৈতিক আদর্শে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পদের মালিকানা মুনাফা বিনিয়োগ করে একটি রাষ্ট্র সেই অর্থনৈতিক আদর্শকে পুঁজিবাদ বা ক্যাপিটালিজম বলে।

 

সমাজতন্ত্র: যে অর্থনৈতিক আদর্শের কারণে সব কিছুর মালিক আমি কেবল রাষ্ট্রের হাতে থাকে সেই আদর্শকে সমাজতন্ত্র বা সোশ্যালিজম বলা হয়। এক্ষেত্রে জনগণের যাবতীয় প্রয়োজন আদি রাষ্ট্র পূরণ করে। সমাজতন্ত্রের জনক কার্ল‌ মার্কস।

 

প্রথম বিশ্ব: স্নায়ু যুদ্ধের সময় যে দেশগুলি আমেরিকার পক্ষে ছিল পুঁজিবাদ ভালোবাসতো এবং যারা ন্যাটো এর সদস্য হয়েছিল সেই দেশগুলোকে প্রথম বিশ্ব বলা হয়।

 

দ্বিতীয় বিশ্ব: স্নায়ু যুদ্ধের সময় যে দেশগুলি সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষে ছিল সমাজতন্ত্র ভালোবাসতো এবং যারা ওয়ারশপ অ্যাক্ট এর সদস্য হয়েছিল সেই দেশগুলোকে দ্বিতীয় বিশ্ব বলা হয়।

 

তৃতীয় বিশ্ব: স্নায়ু যুদ্ধের সময় যে সকল দেশ নিরপেক্ষ ছিল ন্যাম এর সদস্য হয়েছিল এবং যে সকল দেশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বাধীন হয়েছিল সেই দেশ গুলিকে তৃতীয় বিশ্ব বলা হয়।

 


অক্ষশক্তি: কোন যুদ্ধে যারা প্রথমে আক্রমণ করে তাদেরকে অক্ষশক্তি বলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি ছিল (ইতালি + জার্মানি + জাপান)।

 

মিত্রশক্তি: কোন যুদ্ধে যারা আক্রমণ প্রতিহত করে তাদেরকে মিত্রশক্তি বলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রশক্তি ছিল (আমেরিকা + রাশিয়া+ ফ্রান্স + ইউনাইটেড কিংডম )

 

সাবমিসিভ পাওয়ার: কোন দেশ যখন কৌশলগত কারণে অন্য দেশের অধীনতামূলক বন্ধু হয় তখন সেই দেশকে সাবমিসিভ পাওয়ার বলে। যেমন: জাপান বর্তমানে আমেরিকার সাবমিসিভ পাওয়ার।

 

বিশ্বায়ন: বিশ্বায়ন হচ্ছে বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যাবস্থা। এই বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ অন্যান্য দেশগুলোর সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ ব্যাবস্থা তৈরী করতে পারে। সেটা ব্যাবসা বানিয্যের মাধ্যমে হতে পারে। মোটকথা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ করতে পারাটাই হচ্ছে বিশ্বায়ন।

 

বালান্স অফ পাওয়ার: যখন একাধিক দেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় সমান অবস্থা বিরাজ করে তখন সেই দেশগুলিকে বালান্স অফ পাওয়ার বা ক্ষমতার সমতা বলা হয়। যেমন: আমেরিকা ও রাশিয়া।

 

যৌথ নিরাপত্তা: যখন কয়েকটি দেশ একত্রিত হয়ে কোন হুমকির মোকাবেলা করে তখন সেই দেশ গুলিকে যৌথ নিরাপত্তা বা কালেক্টিভ সিকিউরিটি বলা হয়।

 

অস্ত্রীকরণ: যখন কোন দেশ অস্ত্র উৎপাদন ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণ করে তখন সেই দেশকে অস্ত্রীকরণ বা আর্মামেন্ট বলে।

 


সমঝোতা স্মারক: দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে কোন একটি বিষয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার কে সমঝোতা স্মারক বলা হয়। ইংরেজিতে মেমোরেন্ডম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং বলা হয়।

 

অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স এগ্রিমেন্ট: সমঝোতা স্মারক সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য এক বছরে ঠিক কতটুকু বাস্তবায়ন করতে হবে তা ত্রৈমাসিক ভাবে বিবেচনা করা কে অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স এগ্রিমেন্ট বলা হয়। বাংলায় এটিকে বাৎসরিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বলে।

 

সূচক নির্ধারণ চাবি: যেকোনো বিষয়ে লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে সূচক নির্ধারণ করা হয় তাকে "কি পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর" । সংক্ষেপে এটিকে কেপিআই বলে।

 

বাস্তবায়নযোগ্য লক্ষ: আন্তর্জাতিক বিষয় অর্জনযোগ্য বা সমাধানযোগ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করাকে বাস্তবায়নযোগ্য একে এটেইনেবেল গোল বলে।

 

রাষ্ট্রীয় কর্মতৎপরতা: যে কোন ইস্যুতে রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তি হওয়াকে রাষ্ট্রীয় কর্মতৎপরতা বা এস্টেট কোলাবোরেশন বলে।

 

আঞ্চলিকতাবাদ: যখন একটি অঞ্চলের দেশগুলো একত্রিত হয়ে নিজেদের উন্নয়নে কিছু করে তখন সেই দেশগুলোকে আঞ্চলিকতাবাদ বা রিজিওনালিজম বলা হয়।

 

দ্বিপাক্ষিক: যখন দুটি দেশ কোন বিষয় নিয়ে কাজ করে তখন তাদেরকে দ্বিপাক্ষিক বলা হয়।

 

বহুপাক্ষিক: যখন কয়েকটি দেশ কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা বা কাজ করে তখন সেই দেশ গুলিকে বহুপাক্ষিক বা মাল্টিলেটারাল বলা হয়।

 

বিশ্বযুদ্ধ: যে যুদ্ধে বিশ্বের প্রায় সকল দেশ কোন না কোন ভাবে অংশগ্রহণ করে তাকে বিশ্বযুদ্ধ দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়ার বলা হয়। এ পর্যন্ত মোট দুটি বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪ - ১৯১৮)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯ - ১৯৪৫)

 

প্রক্সি ওয়ার: স্নায়ু যুদ্ধের ফলে যখন অন্য কোন অঞ্চলে যুদ্ধ হয় তখন সেই অঞ্চলকে প্রক্সি ওয়ার বা শ্যাডো ওয়ার বলা হয়।

আজকের পর্ব এই পর্যন্তই। আগামী পর্বের আমন্ত্রণ জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি।
সবাই ভালো থাকবেন! নিরাপদে থাকবেন। ধন্যবাদ!

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post